আন্তর্জাতিক রিপোর্ট, ০৪/০৩/২০১৮
সৌদি আরবে রাজপরিবারের সমালোচনা এবং ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার অভিযোগে নিরাপত্তা বাহিনী একের পর এক ইসলামী স্কলারদের গ্রেফতার করছে। গত কয়েকদিনে বহু শীর্ষ আলেম, সাংবাদিক এবং চিন্তাবিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রসিদ্ধ ইসলামী দাঈ সালমান আওদাহ, লা তাহজানের লেখক আয়েজ আল কারনী এবং আলী উমরির নাম রয়েছে।
সৌদি সরকারের অভিযোগ, এই আলেমরা সরকারপন্থি উলামাদের সমালোচনা করেছেন এবং বিশেষত কাতার ইস্যুতে সৌদি সরকারের নীতির বিরোধিতা করেছেন। সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়, যাতে যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের জন্য ক্ষমতার হস্তান্তর পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের সমালোচনার মুখোমুখি না হতে হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেফতারকৃত ইসলামী স্কলারদের মধ্যে রয়েছে শাইখ মুহাম্মদ মূসা আল-শারীফ, শাইখ ইউসুফ আল-আহমেদ, শাইখ সালমান আল-আওদা, শাইখ আওদ আল-করণি, শাইখ নাসর আল-উমর, শাইখ মুহাম্মাদ আল-শানার এবং শাইখ আলী বাদাহদা সহ আরো অনেকেই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সৌদি রাজপরিবার এবং সরকারের নীতির বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছেন।
এই গ্রেফতারি নিয়ে কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, সৌদি সরকার ইতিপূর্বেও এমন অনেক আলেমকে গ্রেফতার করেছে, যারা সরকারের অন্ধ অনুগামী ছিলেন না। ২০১৫ সালে সৌদি সরকার ৪০ জনেরও বেশি আলেমকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে শায়খ হামদ আল হুমায়দি এবং শায়খ ফারিস আজ জাহরানি অন্যতম।
সৌদি সরকারের শাসকপন্থী আলেমদের দ্বারা এসব গ্রেফতারির সমর্থন পাওয়া গেলেও, মানবাধিকার সংগঠনগুলি এ ধরনের পদক্ষেপকে অত্যন্ত সমালোচনামূলক হিসেবে দেখে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, সৌদি সরকার সেসব আলেমকে শাস্তি দিচ্ছে যারা সত্য কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন এবং সরকারের ভুল পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন।
আল্লাহ এই আলেমদের হেফাজত করুন এবং তাদের ওপর এই অত্যাচার নস্যাৎ করুন। আমীন।
সূত্র: আল-জাজিরা, আরাবি ২১, আল আরাবি আল জাদিদ, বিবিসি (আরবি)