রোহিঙ্গা সঙ্কট: বাংলাদেশ ও ভারত মুসলিমদের বিক্ষোভ

মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের নির্বিচার হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পথে নেমেছিল বেশ কয়েকটি মুসলিম ও মানবাধিকার সংগঠন ও সাকল শ্রেনীর মুসলিম।

সিটি টিভি নিউজ,

সেই বিক্ষোভ মিছিলের মূল স্লোগান ছিল মিয়ানমার সরকার ও অং সান সু চি-র বিরুদ্ধে এবং হত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপের দাবিতে।

তবে ওই বিক্ষোভের নানা বক্তা ও জমায়েত হওয়া মানুষদের ক্ষোভ দেখা গেছে বাংলাদেশ সরকার, বিশেষ করে দেশের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা  বিরুদ্ধে। মিয়ানমারের উপদূতাবাসের সামনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা সেদেশের সর্বোচ্চ নেত্রী অং সান সু চি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন। তাদের স্লোগানে এটাও ছিল যে বিশ্বশান্তির নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন কী করে রোহিঙ্গাদের এই নির্বিচার হত্যা হতে দিচ্ছেন নিজের দেশে!

স্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশন, জামায়েতে ইসলামী বাংলাদেশ  সহ কয়েকটি মুসলিম ও মানবাধিকার সংগঠন  ও সাধারণ জনতা জুমা নামাজ শেষ আজকের বিক্ষোভে সামিল হয়েছিল। মিছিলের স্লোগান-পোস্টারে সংগঠনগুলির ক্ষোভ যে মূলত আং সান সু চি এবং মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধেই, সেটা স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছিল।

এদিকে  কলকাতা সহ ভারত জুরে প্রতিবাদ মিছিল সমাবেশ হয়েছে
বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বলছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে তারা হতাশ.

কিন্তু মুসলিম ছাত্র নেতা ওসমান গণি বলছিলেন, একই সঙ্গে তারা হতাশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের ভূমিকা নিয়েও।

"মানুষ মারার কারখানা চলছে সেখানে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেদেশে গেলেন, ডিনার করলেন, নানা চুক্তি সই করলেন, অথচ তিনি ওই ঘটনার কোনও প্রতিবাদ করলেন না! আমরা সবাই আশা করেছিলাম তিনি হয়তো কিছু বলবেন। হতাশ হয়েছি," বলছিলেন মি. গণি।

সংগঠনটিরই আরেক নেতা আব্দুল হামিদ বলছিলেন, ভারতের অভ্যন্তরেও তো মিয়ানমারের মতোই ঘটনা ঘটছে - সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে। তাই মি. মোদী মিয়ানমারের সংখ্যালঘুদের সম্বন্ধে যে অন্য কিছু বলবেন, সেটা আশা করাই হয়তো ভুল।

তিনি বলছিলেন, "মিয়ানমার আর ভারত সরকারের মধ্যে কি কোনও পার্থক্য আছে? সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপরে নির্যাতন হচ্ছে, আর এদেশেও এখানকার সরকার সংখ্যালঘুদের ওপরে নির্যাতন চালাচ্ছে। দুটো সরকার তো একই কাজ করছে।"
আং সান সু চি যখন দীর্ঘদিন গৃহবন্দী হয়ে ছিলেন, সেই সময়ে তার মুক্তির দাবিতে সারা পৃথিবীর সঙ্গেই কলকাতাতেও বহু মিছিল - সমাবেশ হয়েছে। তার অনেকগুলিতেই হাজির ছিলেন মানবাধিকার কর্মী ছোটন দাস। তিনি বলছিলেন যে যার মুক্তির দাবিতে ওইসব মিছিলমিটিংয়ে তিনি সামিল হয়েছিলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেই নেত্রীরই ভূমিকা দেখে তার এখন লজ্জা হয়।

একই সঙ্গে মি. দাসের কথায়, "ভারত নিজের ক্ষেত্রে যা করছে, তারা কোন মুখে প্রতিবাদ করবে মিয়ানমারের ঘটনার? কোনও স্তর থেকেই প্রতিবাদ করে একটা শব্দও খরচ করে নি ভারত। উল্টে দীর্ঘদিন ধরে ভারতে যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থীরা থাকেন, জাতি সংঘের শরণার্থী সংস্থার শংসাপত্র নিয়ে - তাদের ফেরত পাঠানোর নানা ফন্দি ফিকির করা হচ্ছে।"

একদিকে যখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের কোনও কড়া বক্তব্য নেই, সেই সময়েই ভারতে অবস্থানরত প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে চিহ্নিত করে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলছে। এ নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলাও হয়েছে।

জামাতে ইসলামী হিন্দের নেতা ডা. মসিউর রহমান অবশ্য বলছিলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ আর ভারত থেকে ফেরত পাঠাতে হবে, কিন্তু তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে মিয়ানমারকে।

"সেদেশে ফিরে গেলে যে আবারও আক্রান্ত হতে হবে, সেই আশঙ্কা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের থাকবেই। কিন্তু প্রত্যেকটা মানুষেরই আকঙ্খা থাকে নিজের ঘরে ফেরার। মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দিতে হবে আর নাগরিক অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে," বলছিলেন মি. রহমান।

এদিন শুধুই মিয়ানমারের উপদূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে দিন কয়েকের মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরও বড় জমায়েত করার পরিকল্পনা নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংগঠনগুলো।

http://www.bbc.com/bengali/news-41189695

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1077982815672237&id=152116294925565

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1536924169664302&id=999932386696819

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1680376325366548&id=381371491933711

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1288368904607215&id=431207180323396

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1656309011080568&id=111157742262377


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.